ঢাকা ০৩:১৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫, ৭ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজ::
অনিয়মের আখড়া তারাগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে: মালির হাতে এলোপ্যাথি ওষুধ বিতরণ, সিভিল সার্জনের তদন্তের প্রতিশ্রুতি পঞ্চগড়ে আনসার ও ভিডিপি সদস্যদের মধ্যে বাইসাইকেল বিতরণ ডিমলার ঝুনাগাছচাপানীতে বিএনপির সদস্য সংগ্রহে উৎসবের আমেজ তারেক রহমান কর্তৃক ঘোষিত রাস্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা বাস্তবায়নে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত ডিমলার ঝুনাগাছচাপানীতে শ্যামা পূজা ও দীপাবলী উৎসবে আলোচনা সভা ও বস্ত্র বিতরণ নীলফামারীতে আইসিবিসি প্রকল্প বিতর্কের কেন্দ্র বিন্দুতে পরিণত শহর জুড়ে তোলপাড় ফুলবাড়ীতে এমপিওভুক্ত শিক্ষক ও কর্মচারীদের বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত ব্যানার, ফেস্টুন ও স্লোগানে মুখর ডিমলা: বিএনপির সদস্য সংগ্রহে উৎসবের আমেজ রংপুরে মহিষ পালনে পুষ্টি, প্রজনন ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ক তিন দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ সম্পন্ন ফুলবাড়ীতে অভিভাবক ও কিশোর-কিশোরী সমাবেশ এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান
সংবাদ শিরোনাম ::
অনিয়মের আখড়া তারাগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে: মালির হাতে এলোপ্যাথি ওষুধ বিতরণ, সিভিল সার্জনের তদন্তের প্রতিশ্রুতি রামগড়ে জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবসে র‍্যালি ও আলোচনা সভা পঞ্চগড়ে আনসার ও ভিডিপি সদস্যদের মধ্যে বাইসাইকেল বিতরণ ডিমলার ঝুনাগাছচাপানীতে বিএনপির সদস্য সংগ্রহে উৎসবের আমেজ তারেক রহমান কর্তৃক ঘোষিত রাস্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা বাস্তবায়নে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত মিরপুরে পোশাক কারখানা ও রাসায়নিকের গুদামে অগ্নিকাণ্ডে ১৬ জনের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে জেএসএফ তারেককে সভাপতি ও সোহেলকে সাধারণ সম্পাদক করে নিউ হরাইজন লায়ন্স ক্লাব অব নিউইয়র্ক এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন নিউইয়র্কে বাংলাদেশ সোসাইটির সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন ২ নভেম্বর নিউইয়র্কে যশোর সোসাইটি অব আমেরিকা নতুন কমিটি অভিষিক্ত বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী মোশারফ হোসেন খান চৌধুরীর সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত

ডিমলায় বিলুপ্তির পথে ফুটবল: মাঠ হারাচ্ছে প্রাণ, বাড়ছে মাদকাসক্তি

(নীলফামারী) প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০১:৫৩:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৫১ বার পড়া হয়েছে
আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নীলফামারীর সীমান্তবর্তী উপজেলা ডিমলা। একসময় এ উপজেলার গ্রামেগঞ্জে ফুটবল ছিল অন্যতম জনপ্রিয় খেলা। স্কুল মাঠ, গ্রামের খোলা জায়গা কিংবা পাড়ার ময়দান—যেখানেই একটু জায়গা পাওয়া যেত, বিকেলের আড্ডা জমে উঠত ফুটবল নিয়ে। খেলার উল্লাসে মাঠ-ঘাট মুখর থাকত শিশু-কিশোরদের হাসি ও চিৎকারে। কিন্তু কালের পরিক্রমায় সেই মাঠগুলো একে একে হারিয়ে যাচ্ছে। জমির দখল, বাজার বসানো, স্থাপনা নির্মাণ ও অবহেলার কারণে মাঠগুলো এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে। আর মাঠ হারালে যে শুধু খেলার সুযোগই হারায় না, হারায় একটি প্রজন্মের স্বপ্ন ও সুস্থভাবে বেড়ে ওঠার পথও।

ডিমলার এক সময়ের প্রাণবন্ত মাঠগুলো আজ আর আগের মতো নেই। অনেক মাঠ দখল হয়ে গেছে, কোথাও আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। কেউ কেউ মাঠের জায়গায় পাকা স্থাপনা তৈরি করেছে। উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নে খেলার উপযুক্ত মাঠই নেই। সরকারি হিসাবে উপজেলায় মাত্র একটি বড় মাঠ রয়েছে, তবে জনসংখ্যার তুলনায় সেটি অত্যন্ত অপ্রতুল।

স্থানীয়রা বলছেন, যেখানে একসময় প্রতি বিকেলে শত শত শিশু ফুটবল খেলত, এখন সেই মাঠগুলোতে নীরবতা। ফুটবল খেলার পরিবেশ ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় শিশুরা মোবাইল ফোন, ইন্টারনেট গেমস, অনলাইন জুয়া এবং মাদকের মতো ক্ষতিকর বিষয়ের দিকে ঝুঁকছে।

খেলাধুলা শুধু বিনোদনের মাধ্যম নয়, এটি একটি সামাজিক শক্তি। বিশেষ করে ফুটবল তরুণদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে অসাধারণ ভূমিকা রাখে। নিয়মিত খেলাধুলা দেহকে সুস্থ রাখে, মনের চাপ কমায়, শৃঙ্খলা শেখায় এবং দলগতভাবে কাজ করার মানসিকতা তৈরি করে।

স্থানীয় ক্রীড়া সংগঠক রাশেদ খান বলেন, “ফুটবল তরুণদের শৃঙ্খলাবদ্ধ করে। এতে তাদের প্রতিভা বিকশিত হয়। মাঠ হারিয়ে যাওয়ায় তারা এখন সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। ফলে ভুল পথে যাওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে।”

উপজেলার নাউতারা ইউনিয়নের তরুণ ফুটবলার রুবেল হোসেন ছোটবেলা থেকেই জাতীয় দলে খেলার স্বপ্ন দেখতেন। কিন্তু এখন সেই স্বপ্ন যেন অধরাই হয়ে গেছে। তিনি বলেন, ”মাঠ নেই, প্রশিক্ষণ নেই। খেলাধুলার সুযোগ না থাকায় ফুটবল ছেড়ে অন্য পেশায় যেতে হচ্ছে। অথচ আমাদের মধ্যে অনেক প্রতিভাবান খেলোয়াড় আছে।”

স্থানীয় ফুটবলপ্রেমী সামিউল ইসলাম বলেন, “ডিমলার মাঠগুলো যদি ঠিক থাকত, অনেক তরুণ জাতীয় পর্যায়ে খেলতে পারত। কিন্তু সুযোগ না থাকায় প্রতিভা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতে শুধু খেলোয়াড়ই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে না, সমাজও হারাচ্ছে ইতিবাচক শক্তি।”

উপজেলার ক্রীড়া সংগঠকরা বলছেন, মাঠ সংকট ও খেলাধুলার সুযোগের অভাবে ডিমলার তরুণদের একটি বড় অংশ বিপথে যাচ্ছে। ইয়াবা, গাঁজা, ফেনসিডিলসহ বিভিন্ন মাদক দ্রব্য সহজলভ্য হয়ে পড়েছে। পাশাপাশি অনলাইন জুয়া ও টিকটকের মতো ক্ষতিকর আসক্তিও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে।

স্থানীয় অভিভাবকরা বলছেন, সন্তানদের মাঠে নিয়ে যাওয়ার মতো জায়গা নেই। ফলে তারা সারাদিন মোবাইল ফোনে সময় কাটায়। এতে পড়াশোনা নষ্ট হচ্ছে, নষ্ট হচ্ছে চরিত্রও।

সবচেয়ে দুঃখজনক বিষয় হলো, ডিমলায় প্রচুর তরুণ খেলোয়াড় থাকা সত্ত্বেও তাদের প্রতিভা বিকাশের সুযোগ নেই। স্থানীয় ফুটবলপ্রেমীরা মনে করেন, সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি সমাজের বিত্তবান ব্যক্তি ও প্রবাসী সমাজসেবকরা এগিয়ে এলে ফুটবলের হারানো গৌরব আবারও ফিরতে পারে। নিয়মিত টুর্নামেন্ট, প্রশিক্ষণ, মাঠ সংস্কার ও ক্রীড়া একাডেমি স্থাপন করলে ডিমলার তরুণরা আবারো জাতীয় পর্যায়ে খেলার সুযোগ পাবে।

স্থানীয় ফুটবলপ্রেমী জাহিদুল ইসলাম বলেন, “ডিমলার মাটিতে অসংখ্য প্রতিভা আছে। শুধু একটু সুযোগ দিলেই তারা দেশের মুখ উজ্জ্বল করবে। ফুটবলকে বাঁচাতে হলে মাঠ ফিরিয়ে দিতে হবে।”

ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমরানুজ্জামান এ বিষয়ে বলেন, “তরুণদের সুস্থ বিনোদনের জন্য খেলাধুলার বিকল্প নেই। আমরা কয়েকটি মাঠ সংস্কারের পরিকল্পনা নিয়েছি। পাশাপাশি বিদ্যালয় পর্যায়ে ক্রীড়া কার্যক্রম সক্রিয় করার উদ্যোগও রয়েছে। মাঠ রক্ষা ও নিয়মিত টুর্নামেন্ট আয়োজনের মাধ্যমে তরুণদের খেলাধুলায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব।”

তিনি আরও বলেন, “খেলাধুলার মাধ্যমে তরুণদের মাদক ও অপরাধ থেকে দূরে রাখা যায়। এজন্য প্রশাসন সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবে।”

প্রত্যান্ত অঞ্চলেও যেখানে একসময় ফুটবলের গোলের উল্লাসে মাঠ কেঁপে উঠত, সেখানে আজ বিরাজ করছে নিস্তব্ধতা। হারিয়ে যাচ্ছে খেলার মাঠ, সাথে সাথে হারিয়ে যাচ্ছে একটি প্রজন্মের স্বপ্ন। এখনই উদ্যোগ না নিলে হয়তো ফুটবল ডিমলার ইতিহাসে শুধু স্মৃতিচারণের বিষয় হয়ে থাকবে।

তবে আশার আলো এখনো আছে। স্থানীয় জনগণ, প্রশাসন এবং সমাজসেবকরা যদি একসঙ্গে এগিয়ে আসেন, তবে আবারও প্রাণ ফিরে পেতে পারে ফুটবল। মাঠে ছুটে বেড়ানো শিশুরা ফিরিয়ে আনতে পারে সেই হারানো উল্লাস, যা একসময় ডিমলার প্রাণশক্তি ছিল।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ডিমলায় বিলুপ্তির পথে ফুটবল: মাঠ হারাচ্ছে প্রাণ, বাড়ছে মাদকাসক্তি

আপডেট সময় : ০১:৫৩:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

নীলফামারীর সীমান্তবর্তী উপজেলা ডিমলা। একসময় এ উপজেলার গ্রামেগঞ্জে ফুটবল ছিল অন্যতম জনপ্রিয় খেলা। স্কুল মাঠ, গ্রামের খোলা জায়গা কিংবা পাড়ার ময়দান—যেখানেই একটু জায়গা পাওয়া যেত, বিকেলের আড্ডা জমে উঠত ফুটবল নিয়ে। খেলার উল্লাসে মাঠ-ঘাট মুখর থাকত শিশু-কিশোরদের হাসি ও চিৎকারে। কিন্তু কালের পরিক্রমায় সেই মাঠগুলো একে একে হারিয়ে যাচ্ছে। জমির দখল, বাজার বসানো, স্থাপনা নির্মাণ ও অবহেলার কারণে মাঠগুলো এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে। আর মাঠ হারালে যে শুধু খেলার সুযোগই হারায় না, হারায় একটি প্রজন্মের স্বপ্ন ও সুস্থভাবে বেড়ে ওঠার পথও।

ডিমলার এক সময়ের প্রাণবন্ত মাঠগুলো আজ আর আগের মতো নেই। অনেক মাঠ দখল হয়ে গেছে, কোথাও আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। কেউ কেউ মাঠের জায়গায় পাকা স্থাপনা তৈরি করেছে। উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নে খেলার উপযুক্ত মাঠই নেই। সরকারি হিসাবে উপজেলায় মাত্র একটি বড় মাঠ রয়েছে, তবে জনসংখ্যার তুলনায় সেটি অত্যন্ত অপ্রতুল।

স্থানীয়রা বলছেন, যেখানে একসময় প্রতি বিকেলে শত শত শিশু ফুটবল খেলত, এখন সেই মাঠগুলোতে নীরবতা। ফুটবল খেলার পরিবেশ ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় শিশুরা মোবাইল ফোন, ইন্টারনেট গেমস, অনলাইন জুয়া এবং মাদকের মতো ক্ষতিকর বিষয়ের দিকে ঝুঁকছে।

খেলাধুলা শুধু বিনোদনের মাধ্যম নয়, এটি একটি সামাজিক শক্তি। বিশেষ করে ফুটবল তরুণদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে অসাধারণ ভূমিকা রাখে। নিয়মিত খেলাধুলা দেহকে সুস্থ রাখে, মনের চাপ কমায়, শৃঙ্খলা শেখায় এবং দলগতভাবে কাজ করার মানসিকতা তৈরি করে।

স্থানীয় ক্রীড়া সংগঠক রাশেদ খান বলেন, “ফুটবল তরুণদের শৃঙ্খলাবদ্ধ করে। এতে তাদের প্রতিভা বিকশিত হয়। মাঠ হারিয়ে যাওয়ায় তারা এখন সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। ফলে ভুল পথে যাওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে।”

উপজেলার নাউতারা ইউনিয়নের তরুণ ফুটবলার রুবেল হোসেন ছোটবেলা থেকেই জাতীয় দলে খেলার স্বপ্ন দেখতেন। কিন্তু এখন সেই স্বপ্ন যেন অধরাই হয়ে গেছে। তিনি বলেন, ”মাঠ নেই, প্রশিক্ষণ নেই। খেলাধুলার সুযোগ না থাকায় ফুটবল ছেড়ে অন্য পেশায় যেতে হচ্ছে। অথচ আমাদের মধ্যে অনেক প্রতিভাবান খেলোয়াড় আছে।”

স্থানীয় ফুটবলপ্রেমী সামিউল ইসলাম বলেন, “ডিমলার মাঠগুলো যদি ঠিক থাকত, অনেক তরুণ জাতীয় পর্যায়ে খেলতে পারত। কিন্তু সুযোগ না থাকায় প্রতিভা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতে শুধু খেলোয়াড়ই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে না, সমাজও হারাচ্ছে ইতিবাচক শক্তি।”

উপজেলার ক্রীড়া সংগঠকরা বলছেন, মাঠ সংকট ও খেলাধুলার সুযোগের অভাবে ডিমলার তরুণদের একটি বড় অংশ বিপথে যাচ্ছে। ইয়াবা, গাঁজা, ফেনসিডিলসহ বিভিন্ন মাদক দ্রব্য সহজলভ্য হয়ে পড়েছে। পাশাপাশি অনলাইন জুয়া ও টিকটকের মতো ক্ষতিকর আসক্তিও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে।

স্থানীয় অভিভাবকরা বলছেন, সন্তানদের মাঠে নিয়ে যাওয়ার মতো জায়গা নেই। ফলে তারা সারাদিন মোবাইল ফোনে সময় কাটায়। এতে পড়াশোনা নষ্ট হচ্ছে, নষ্ট হচ্ছে চরিত্রও।

সবচেয়ে দুঃখজনক বিষয় হলো, ডিমলায় প্রচুর তরুণ খেলোয়াড় থাকা সত্ত্বেও তাদের প্রতিভা বিকাশের সুযোগ নেই। স্থানীয় ফুটবলপ্রেমীরা মনে করেন, সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি সমাজের বিত্তবান ব্যক্তি ও প্রবাসী সমাজসেবকরা এগিয়ে এলে ফুটবলের হারানো গৌরব আবারও ফিরতে পারে। নিয়মিত টুর্নামেন্ট, প্রশিক্ষণ, মাঠ সংস্কার ও ক্রীড়া একাডেমি স্থাপন করলে ডিমলার তরুণরা আবারো জাতীয় পর্যায়ে খেলার সুযোগ পাবে।

স্থানীয় ফুটবলপ্রেমী জাহিদুল ইসলাম বলেন, “ডিমলার মাটিতে অসংখ্য প্রতিভা আছে। শুধু একটু সুযোগ দিলেই তারা দেশের মুখ উজ্জ্বল করবে। ফুটবলকে বাঁচাতে হলে মাঠ ফিরিয়ে দিতে হবে।”

ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমরানুজ্জামান এ বিষয়ে বলেন, “তরুণদের সুস্থ বিনোদনের জন্য খেলাধুলার বিকল্প নেই। আমরা কয়েকটি মাঠ সংস্কারের পরিকল্পনা নিয়েছি। পাশাপাশি বিদ্যালয় পর্যায়ে ক্রীড়া কার্যক্রম সক্রিয় করার উদ্যোগও রয়েছে। মাঠ রক্ষা ও নিয়মিত টুর্নামেন্ট আয়োজনের মাধ্যমে তরুণদের খেলাধুলায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব।”

তিনি আরও বলেন, “খেলাধুলার মাধ্যমে তরুণদের মাদক ও অপরাধ থেকে দূরে রাখা যায়। এজন্য প্রশাসন সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবে।”

প্রত্যান্ত অঞ্চলেও যেখানে একসময় ফুটবলের গোলের উল্লাসে মাঠ কেঁপে উঠত, সেখানে আজ বিরাজ করছে নিস্তব্ধতা। হারিয়ে যাচ্ছে খেলার মাঠ, সাথে সাথে হারিয়ে যাচ্ছে একটি প্রজন্মের স্বপ্ন। এখনই উদ্যোগ না নিলে হয়তো ফুটবল ডিমলার ইতিহাসে শুধু স্মৃতিচারণের বিষয় হয়ে থাকবে।

তবে আশার আলো এখনো আছে। স্থানীয় জনগণ, প্রশাসন এবং সমাজসেবকরা যদি একসঙ্গে এগিয়ে আসেন, তবে আবারও প্রাণ ফিরে পেতে পারে ফুটবল। মাঠে ছুটে বেড়ানো শিশুরা ফিরিয়ে আনতে পারে সেই হারানো উল্লাস, যা একসময় ডিমলার প্রাণশক্তি ছিল।